রবিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৫

হৃদয় খেলা - হাসান ইমতি













বন্ধু, যেওনা এখনই, থাকো নাহয় আরও কিছুক্ষণ,
থাকো উষ্ণ হৃদয়ের কাছাকাছি, থাকো দৃষ্টি সীমায়,  
আরও কিছুটা সময় নাহয় কাটুক মৌন ভাললাগায়,
কিছু রৌদ্র ছায়ার গোপন ভালোবাসাবাসির লুকোচুরি
খেলা দেখি দুজন নাহয় বসে পাশাপাশি কিছুটা সময়,
বুকের ভেতর তোমায় নিয়ে কিছু স্মৃতি নাহয় জমুক,
আজ দুপুরে বুকের ঘরে তোমায় ঘিরে ভালোলাগার
একটি কোকিল না হয় গলা ছেড়ে ইচ্ছেমত ডাকুক,
প্রানের ভেতর আজ দুপুরের সুর তুলে রুমঝুম নুপুরে
তোমায় ঘিরে কিছু ঘোরলাগা রঙের ছোঁয়া নাহয় লাগুক,
তোমার সাথে এক জীবনের কিছু মধু প্রহর নাহয় কাটুক,
মাঝদুপুরে মনের ঘরে তোমায় ভাবনায় একটি একলা
জোনাকপোকার রঙিন আলো নাহয় তুমুল সুখে জ্বলুক    

বন্ধু, এই চোখে নাহয় আজ একটু ভুল করা চোখ রাখ,
এই চোখে মেঘ বিদ্যুতের ঝলক আছে, ভালোলাগার
প্রশ্রয় আছে, জুড়ে থাকার, সাথে বাচার আস্থা আছে   
মন হারানোএই প্রহরে কিছু মধুময় ভুল না হয় হোক,  
এই কঠিন হাতে নাহয় একটু রাখ তোমার নাজুক হাত,
ছুঁয়ে দেখো এই হাতে প্রিয় মানুষের ছোঁয়া আছে, আছে
নির্ভরতার আশ্রয়, আছে পাশে থাকার, ছুঁয়ে বাচার ঈপ্সা

বন্ধু, যদি ভালো না বাসো, যদি ফিরে যাবে বলে এসে
থাকো তবে ভুলেও কখনো হৃদয় দিয়ে হৃদয় ছুঁয়োনা,
চোখে থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়া যায়, ধরে রাখা হাত
ছেড়ে দেয়া যায় কিন্তু হৃদয় খেলায় হৃদয় দিয়ে হৃদয়
স্পর্শ করলে না কখনো চোখ ফিরিয়ে নেয়া যায়, না হাত
ছেড়ে দেয়া যায় , না হৃদয় ফেরানো যায় কোনদিন

অনন্ত অম্ল অপেক্ষা - হাসান ইমতি












আমার সব কবিতার প্রথম পাঠিকা এক নীলবসনা মেঘ,
আমার না লেখা কবিতাগুলো সেই প্রথম পড়ে,
কবিতার পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে সে পড়ে,
শুয়ে শুয়ে বিনুনি দুলিয়ে দুলিয়ে সে পড়ে,
বালিশে মাথা রেখে দেয়ালে পা দিয়ে সে পড়ে,
বুকের উপর কাবিতার খাতা রেখে সে পড়ে,
পড়তে পড়তে সে বারবার লুটোপুটি খায়,
হাসতে হাসতে সে অহেতুক গড়াগড়ি যায়,
এভাবে নিয়মিত প্রতিদিন সে রাত্রি দ্বিপ্রহর পর্যন্ত,
চোখ ঘুমে জড়িয়ে না আসা অবধি পড়তেই থাকে,
সে আমার সব না লেখা কবিতার প্রথম পাঠিকা ।

পড়তে পড়তে সে স্বার্থপর ঘুমের দেশে হারিয়ে যায় আমার
না লেখা কবিতার খাতা তার বুকের কোমল বল্কলে চেপে,
তাই আজকাল আমি আর রাতে একবিন্দু ঘুমাতে পারি না,
আমার কলমের গোপন যোনী ফেটে যুবতীর মাসিকের
মত লাল রক্ত আসে, হয়না কোন প্রিয় কবিতার গর্ভধারন,
তাই বহুকাল আমি এক নপুংসক নির্বাসিত কবি,
আমার স্বপ্নেও সেই নীল বসনা আজকাল আর আসে না,
আমার পৌরুষ আর পায়না খুঁজে নীল বসনার ভ্রুন,
তাই আমি আজ শীতঘুম কাতর অনুর্বর কবির ফসিল,
কবেকার চলে যাওয়া বিস্মৃত সেই প্রথম প্রেম, প্রথম ভুল,
প্রথম প্রতারণা, প্রথম কষ্ট নিয়ে আর কত কবিতা লেখা যায় ?

তাই আমি আজ আর নতুন কোন কবিতা লিখতে পারিনা,
কবিতারা আমার হৃদয়ের চোরাগলিতে এখন আর আসে না,
কত বসন্ত এসে ফিরে যায় তবু কবিতারা ফিরে আসে না,
তবু অপেক্ষায় থাকি সেই নীল বসনার হেঁয়ালির খেলা শেষের,
তবু অপেক্ষায় থাকি কখন সে আমার কবিতাদের ছুটি দেবে ,
এখন আমার অপেক্ষার কাল, শুধুই অপেক্ষা, অনন্ত অম্ল অপেক্ষা ।



হাসান ইমতি 

স্বরচিত
হাসান ইমতির কবিতারা 

সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৩

ফেসবুকঃ ন্দরীর খোঁজ ও ফেকবুক - হাসান ইমতি














পটভূমিঃ

সেই মার্ক এলিয়ট জুকার বার্গ এর হাত ধরে শুরু এরপর
ফেসবুককে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। যত দিন গেছে
ততই বেড়েছে ফেসবুকের ব্যপ্তি,সদস্য সংখ্যা ও জনপ্রিয়তা।
সমস্যা, অভিযোগও আছে প্রচুর তবুও গুগল, টুইটার, ইয়াহু,
মাইস্পেস সবাইকে পিছে ফেলে আজ নেট দুনিয়ায় নিজের
শ্রেষ্ঠত্ব জানান দিয়ে শত কোটি সদস্য নিয়ে সগৌরবে সামনে
এগিয়ে চলেছে ফেসবুক । কেউ জানে না, এর শেষ কোথায় ।

সময় কালঃ

সেই ২০০৪ থেকে অদ্যবধি চলছে ফেসবুক । হয়তো চলবে
মানব সভ্যতার শেষ পর্যন্ত, হয়তো তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ পর্যন্ত,
হয়তো পৃথিবী, সূর্য বা সৌর জগৎ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত ।
হয়তোবা কোন আইনগত জটিলতায়, নতুন কোন প্রযুক্তির
আগমনে বা মানুষের রুচির পরিবর্তনে বন্ধ হয়ে যাবে যেকোন
সময় । আমার কেউই জানিনা কি ঘটবে আগামী দিন গুলোতে
আমরা যারা আজ ফেসবুকে বিচরণ করছি এক শতাব্দী পর
আমরা কেউ হয়তো থাকবো না কিন্তু ফেসবুক হয়তো তখনো
থাকবে । ফেসবুকে থাকবে আমাদের উত্তর পুরুষের বিচরণ ।

স্থানঃ

স্থানের সঙ্কীর্ণ সীমারেখা প্রযোজ্য নয়। আপাতত শুধু এই পৃথিবীতে
সীমাবদ্ধ । ভবিষ্যতে ভিনগ্রহের এলিয়েনরাও বিবেচ্য হতে পারে।  

পাত্র পাত্রীঃ

যে কেউ, জাত, কুল, বংশ, বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদি সঙ্কীর্ণতা প্রযোজ্য নয় ।
আপাতত শুধু এই পৃথিবীর মানুষদের জন্য উন্মুক্ত । ভবিষ্যতে পশু
পক্ষী কুল, কীট পতঙ্গ, রোবট, বা এলিয়েনরাও বিবেচ্য হতে পারে।

ফেসবুক কথনঃ  সুন্দরীর খোঁজ ও ফেকবুক

ফেসবুকে আসি আমি প্রতিদিন রোজ,
দিন রাত চলে সুন্দরী মেয়েদের খোঁজ ।
চারপাশে কত শত প্রোফাইল সুন্দরী,
কি করি, কাকে ছেড়ে কাকে যে ধরি ।

কত শত সুন্দরী এঞ্জেল আর প্রিন্সেস,
যত দেখি কিছুতেই দেখা হয়না শেষ ।
ফেসবুক প্রোফাইল সুন্দরীদের মেলা,
দেখতে দেখতে কখন যে যায় বেলা ।

টাইমলাইন, প্রোফাইল আর নিজের ওয়াল,
বোঝে কার সাধ্যি কে আসল, কে ভেজাল ।
কার ছবি কে যে দেয় তার নেই কোন খোঁজ,
শাকচুন্নীও হয়ে উঠে যে সরোজিনী নীরোজ ।

ফেসবুকে সব মেয়েই তো অনিন্দ্য সুন্দরী,
যেন মর্তলোকে স্বর্গের সব অপ্সরা, হুরপরী ।
সত্যিকার ঘটনা কেউ করতে গেলে যাচাই,
হয়ে যাবে রামবোকা, হয়ে যাবে সে ভোদাই ।

এক্যাউন্ট আছে অনেকেরই ভুয়া বা ফেক ,
অনেকেরইই আইডি  দুই,তিন বা ততোধিক ।
আবুলের ফেসবুক নাম হয় ফারিয়া এঞ্জেল,
প্রোফাইল ছবিতে দেয়া আগরওয়াল কাজল ।

দিন নেই রাত নেই, খাওয়া নাওয়াও নেই,
ফেসবুক অবিরাম চলে, চলছে, চলবেই
চলছে তো চলছেই, সেতো আজ হটকেক,
ফেসবুক নাম তার আসলে সে যে ফেকবুক ।


হাসান ইমতি 

স্বরচিত
হাসান ইমতির কবিতারা 

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...